ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা

ক্ষুধা-শীতের সঙ্গে কক্সবাজারের মানুষের লড়াই

শাহেদ হোছাইন মুবিন, উখিয়া।
প্রকাশিত: ১৭/০১/২০২৪ ২:২২ পিএম

সারা দেশের মত কক্সবাজারেও জেঁকে বসেছে শীত। সন্ধ্যা থেকে পরদিন আধাবেলা পর্যন্ত থাকছে প্রচন্ড শীতের দাপট। দুপুরের পর সূর্যের মুখ দেখা গেলেও রোদের উত্তাপ তেমন অনুভূত হয় না। ফলে এ জনপদে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।

হাড় কাঁপানো শীতে শুধু জনজীবন নয়, নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে কাজের যোগানও। ঠাণ্ডায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। কিন্তু, শীতের কষ্টের চেয়েও পেটের ক্ষুধার কষ্ট বেশি হয়ে দেখা দিয়েছে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য। এই কনকনে শীতেও পেটের তাগিদে শীত উপেক্ষা করে কেউ কেউ বাইরে বের হলেও কষ্টের সীমা নেই তাদের। একদিকে ঘন কুয়াশা অন্যদিকে হিমেল হাওয়া। শীত বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা,পত্রিকার হকার,পরিচ্ছন্নতাকর্মী,রিকশাচালক,দিনমজুর, শিশু,বয়স্ক, ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

ভোরবেলা শহরের মানুষ বিক্রির হাট নামে পরিচিত গুনগাছতলা মোড়ে গিয়ে দেখা মেলে বেশ ক’জন শ্রমিকের। মাঘের এই তীব্র শীতেও তারা তাদের কাজের সরঞ্জাম নিয়ে জড়ো হয়েছেন কাজের আশায়।

এমনই একজন শ্রমিক মানিক মিয়া জানান, শীতের তীব্রতায় কাজের পরিমান কমে গেছে অনেক। আগে ভোরবেলাতেই কাজে যেতে পারলেও এখন সেই উপায় নেই। তাই পেট চালানোর চিন্তায় ভোর হতেই ছুটে আসেন এই হাটে। তিনি বলেন, খাওন তো খেতে হবে, শীতে মরার আগে কি ক্ষুধায় মরবো নাকি? একদিকে শীত অন্যদিকে ক্ষুধা তারা কোনদিকে যাবে? এমন প্রশ্ন তার।

তিনি আরো জানান, তারা প্রায় ১৭০-১৮০ জন দিনমজুর এখানে থাকলেও এখনো প্রশাসন বা ব্যক্তি উদ্যোগে তাদের শীতের কম্বল কিংবা সোয়েটার দিয়ে সাহায্য করা হয়নি।

টমটম ( অটোরিকশা) চালক শাহিন মোহাম্মদ জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে চলাচল বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। হেড লাইট জ্বালিয়েও কিছু দেখা যায় না। এ ছাড়া সড়কে যাত্রী নেই বলে আয়ও কমে গেছে।

একাধিক শ্রমজীবীরা জানান, ঠান্ডার কারণে সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছেন না তারা। যদিও পেটের দায়ে কাজের খোঁজে বের হতেই হচ্ছে। ঠান্ডায় তাদের হাত-পা জমে আসে কাজ করতে কষ্ট হয়।

ক্রমেই শীত বাড়ার সাথে সাথে অধিকাংশ পরিবারেই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কনকনে ঠান্ডায় খড়-কুটো জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা করছেন শিশু-বৃদ্ধসহ অনেকেই। শীতবস্ত্রের অভাবে অতি কষ্টে দিন কাটছে জেলার হতদরিদ্র মানুষের।

শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আশিষ দে বলেন, শীতকালে শিশুদের জন্য বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। গরম কাপড়ের পাশাপাশি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাও জরুরি।

জুনিয়র কনসালটেন্ট, শিশু বিভাগের ডা. মায়েনু বলেন, শীতে অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় হতে পারে নিউমোনিয়ার মতো জটিল রোগ। যা শিশুদের ভোগাবে বেশি। এছাড়াও শীতে হতে পারে ভাইরাস জনিত সংক্রামক রোগও।

এদিকে ঠাণ্ডা জনিত যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ওষুধ সেবনের কথা জানান বিশেষজ্ঞরা।

হাওয়া দফতর বলছে, আরো কিছুদিন থাকবে এই শৈত্যপ্রবাহ, সেইসাথে হতে পারে বৃষ্টিও। এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে ও কাজের আকালে তাই প্রশাসনের কাছে সাহায্য প্রত্যাশী এই খেটে খাওয়া মানুষেরা।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে নিহত মেজর সিনহা হত্যা মামলা দ্রুত শুনানি করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আবেদন

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে নিহত সেনাবাহিনীর ...

রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালীতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ, রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশে প্রত্যাবাসনসহ ৭ দফা ...

উখিয়ার সন্তান রফিকুল করিমকে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়লে যুগ্ম সচিব পদে পদায়ন

উখিয়ার সন্তান রফিকুল করিমকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়লে যুগ্ম সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে। ...